সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
ফেনীর ছাগলনাইয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএম মুর্শেদসহ ১১ পুলিশ সদস্য এবং পুলিশের দুই কথিত সোর্সের নামে চাঁদা জন্য গুলি করে এক ব্যক্তিকে পঙ্গু করার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি এই মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এজাহার উল্লেখ করা আসামিরা হলেন- ছাগলনাইয়া থানার সাবেক ওসি এমএম মোর্শেদ, (বর্তমানে ঢাকাস্থ কমিশনার কার্যালয়,) এসআই মো. শহিদুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন, এএসআই মো. ফিরোজ আলম, মো. মাহবুল আলম সরকার, এসআই মো. খোরশেদ আলম, কনস্টেবল সুকান্ত বড়ুয়া, থানায় কর্মরত বর্তমান কনস্টেবল মো. নুরুল আমিন, সাবেক কনস্টেবল মো. মাঈন উদ্দিন, বর্তমান কনস্টেবল মো. নুরুল আমিন, মো. সিরাজুল ইসলাম ও পুলিশের দুই সোর্স ছাগলনাইয়ার উপজেলার এলনা পাথর এলাকার আবুল হোসেনের দুই ছেলে আবুল হাসেম ও আবুল খায়ের ছোটন ওরফে দালাল ছোটন।
মামলার বাদীর আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু জানান, আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কোন কর্মকর্তাকে মাধ্যমে অভিযোগটি তদন্ত করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে।
মামলার বাদী গিয়াস উদ্দিন দুলাল একজন পিকআপ চালক। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেছেন, গত বছরের ১৭ জানুয়ারি দুপুরে ফেনী সদরের কাজীরবাগে মাটি বহন করার সময় মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে থানার সোর্স আবুল হাসেম ও আবুল খায়েরসহ পুলিশ সদস্যরা তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। কিন্তু তার পক্ষে এত টাকা চাঁদা দিওয়া সম্ভব ছিলনা। ওইদিন বিকেল পুলিশ একটি মাইক্রোবাসে তুলে তাকে ছাগলনাইয়ার পাঠানগর এলাকায় ব্রাদার্স ব্রিকফিল্ডে নিয়ে যায়। সেখানে ওসি এম এম মুর্শেদ এসে চোখ বেঁধে আবার ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, পরে খবর পেয়ে তার মা ও বোন এক লাখ দেওয়ার কথা বললেও ওসি রাজি না হয়ে আবার চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে করে উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের রাস্তায় মাথায় একটি নির্জন স্থানে নিয়ে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে ও ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্য সুকান্ত বড়ুয়ার কাছ থেকে শটগান নিয়ে ওসি নিজে দুলালের ডান পায়ে ৩ রাউন্ড গুলি করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, পরে অজ্ঞান হয়ে পড়লে মৃত্যু হয়েছে ভেবে প্রথমে তারা গিয়াসকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু আশঙ্কাজনক দেখে কতর্বরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে তার ডান পা কেটে ফেলে দেন। ঘটনার ৭ দিন পর পুলিশ হেফাজতে চট্রগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবার তার বিরুদ্ধে ১৪শ পিস ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মিথ্যা মামলা করে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার বাদী গিয়াস উদ্দিন দুলাল জানান, পঙ্গু হওয়ার পর থেকে তিনি অসুস্থ, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মানবেতরভাবে জীবন যাপন করছেন, তাই মামলা করতে দেরি হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেছেন তিনি।